ফুলছড়ি উপজেলা গাইবান্ধা জেলার ০৭ টি উপজেলার মধ্যে একটি। এ উপজেলার মোট আয়তন ৭৭,৬০০ একর বা ৩১৪ বর্গ কিলোমিটার। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী ১,৬৫,৩৩৪ জন। ফুলছড়ি উপজেলা ০৭(সাত)টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এগুলো হ’ল ১) কঞ্চিপাড়া, ২) উড়িয়া,৩) উদাখালী,৪) গজারিয়া, ৫)ফুলছড়ি, ৬)এরেন্ডাবাড়ী,৭) ফজলুপুর ইউনিয়ন। এ উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় প্রতি বছর নদীবাহিত এলাকায় সৃষ্টি হয় অসংখ্য চর। ১৯১৪ সালে গাইবান্ধা থানা বিভক্ত হয়ে ব্রহ্মপুত্রের তীরে স্থাপিত হয় ফুলছড়ি থানা। সে সময়ে ফুলছড়ি ঘাটে ভিড়তো বড় বড় জাহাজ,লঞ্চ,স্টিমার। ইংরেজ লর্ডরা গাইবান্ধার নাম না জানলেও চিনতো ফুলছড়ি ঘাট।
নামকরণঃ ফুলছড়ি উপজেলা নামকরণের তেমন কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। ১৮৩৬ সালে যমুনা সৃষ্টির পূর্বে গাইবান্ধা অঞ্চলে ঘাঘট,আলাই, জিঞ্জিরাম,বাঙ্গালী,মানস, গজারিয়া,আখীরা,নলেয়া,ব্রক্ষ্মপুত্র, তিস্তা ইত্যাদি নদী প্রবাহিত ছিল। কালের বিবর্তনে,ভূমিকম্পে এ সমসত্ম নদীর গতিপথের পরিবর্তন হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় প্রতি বছর নদীবাহিত এলাকায় সৃষ্টি হয় অসংখ্য চর। ব্রহ্মপুত্রের খন্ড খন্ড চরগুলোতে উঠে সাদা কাশফুল তা দেখেই হয়তোবা কোন মিষ্টভাষী এলাকাকে ফুলছড়ি নামে অভিহিত করেছিলেন,তার ইতিহাস পাওয়া যায় না। ১৯১৪ সালে গাইবান্ধা থানা বিভক্ত হয়ে ব্রহ্মপুত্রের তীরে স্থাপিত হয় ফুলছড়ি থানা।
ভোগলিক অবস্থানঃ উত্তরে গাইবান্ধা সদর উপজেলা,পূর্বে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলা,দক্ষিণে সাঘাটা উপজেলা, পশ্চিমে গাইবান্ধা সদর ও সাঘাটা উপজেলা।
ইংরেজ শাসনামলে দেশে রেলওয়ে ব্যবস্থা চালু হলে উত্তরাঞ্চলের সাথে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ,চট্টগ্রামসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র পথ ছিল নৌ পথ। সেসময়ে এই ঘাটটি ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ নৌঘাট হিসেবে চালু হলেও পরবর্তীতে নদীভাঙ্গনজনিত কারণে কয়েকবার এর স্থান পরিবর্তিত হলে প্রথমে ১৯৯৭ সালে এবং পরে ২০০০ সালে নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে ঔ নৌপথটি (ফুলছড়ি- বাহাদুরাবাদ) পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর গাইবান্ধা শহর সংলগ্ন ফুলছড়ি উপজেলাধীন বালাসি নামকস্থানে ঘাটটি স্থান্তান্তর করে বালাসি-বাহাদুরাবদ ঘাট চালু করা হয়। সেই সাথে রেলওয়ের ওয়াগন পারাপারের স্টেশনটিও বালাসিতে স্থান্তান্তর করে আনা হয়। আশি’র দশকে তৎকালিন এরশাদ সরকারের আমলে বালাসীতে একটি নৌঘাটি ও একটি জ্বালানী তেলের ডিপোও স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন এই নৌপথটি চালু থাকার পর ২০০৫ সালে ২৫ জুন যাত্রী পারাপার অলাভজনক বিবেচনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ফেরী চলাচল বন্ধ করে দেয়। স্বভাবতই ওয়াগন পারাপারও একই কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষএকসময় বন্ধ করে দেয়। এর পরও যমুনার ওপারে বাহাদুরাবাদ ঘাট থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন সার্ভিস চালু রাখা হয়। কিন্তু ফেরী সার্ভিস বন্ধের কারণে বালাসি ঘাট থেকে ত্রিমোহনী রেলওয়ে জংসন দিয়ে দিনাজপুর ও সান্তাহার রুটেও ট্রেন চলাচল বন্ধ বন্ধ করে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বর্ষাকালে ওয়াগন পারাপারের ব্যবস্থা করা হলেও যাত্রী পারাপারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে উত্তরাঞ্চলের সাথে জামালপুর,শেরপুর তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী যাত্রী সাধারনের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতদসতেবও সাধারন যাত্রীগণকে জানমালের ঝুকি নিয়ে ঝুকিপূর্ণ ও ঘুরপথে বাস অথবা ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে টাঙ্গাইল,শেরপুর, জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় যাতায়াত করতে হচ্ছে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS